প্রতিটা পিতা-মাতায়
ই চাই তার ছেলে মেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। ভদ্র সমাজে বসবাস করবে। ভদ্র লোকদের
সাথে মিশে ভাল ব্যবহার করবে। কিন্তু প্রতিটা পিতা মাতা মানে এক একজন অভিভাবক নয়। আর
একটা কথা বলতে গেলে প্রতিটা অভিভাবক মানে পিতা মাতা নয়।
একজন পিতা বা
মাতা যত উচ্চ ডিগ্রিধারী হোক না কেন সে একজন অভিভাবক হতে পারে না।কারণ অভিভাবকের দায়িত্ব
টা খুব কঠিন একটা বড় কাজ। সবাই এই দায়িত্ব টা যথাযতভাবে পালন করতে পারে না। ছেলে ও
মেয়ে বেড়ে উঠার পেছনে অভিভাবকের বৃহত অবদান রয়েছে।
অভিভাবকের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালণের মাধ্যমে একজন
মানুষ হতে পারে পার্থিব জগতের প্রশংসার পাত্র।
Orbit computer-শিক্ষক ছাত্রের সম্পর্ক ও বর্তমান প্রেক্ষাপট শেষ পার্ট. অভিভাবকের কর্তব্য। |
পক্ষান্তরে এ দায়িত্বে কেউ যদি অবহেলা করে
সে হবে উভয় জাহানের কুলাঙ্গার। অর্থাদ সে ইহকাল ও পরকাল উভয় হারাবে।সে একটি পরিবার,
সমাজ বা একটি রাট্রের হলেও তার কোন নিস্থান নেই।আল্লাহপাক কোরআনুল কারিমের বহু আয়াতে
অভিভাবকের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সৃষ্টিজগতের মানব সম্পর্কে বিভিন্ন প্রঙ্গাপন
জারি করেছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আল্লাহ
তাআলা তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন।’
[সুরা নিসা:১১]
‘হে মুমিনগণ! তোমরা
নিজেদেরকে এবং পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর।’
[সুরা ইবরাহিম: আয়াত.৬]
এছাড়া হযরত মোহাম্মদ (স:) তার বিভিন্ন হাদিস
দ্বারা অভিভাবকদের দাযিত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবিহিত করেছেন।
যেমন-তিনি বলেন….গৃহকর্তা তার পরিবার-পরিজনের রক্ষণাবেক্ষণকারী সে তার অধিনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। মহিলা তার স্বামীর ঘরের রক্ষাকত্রী। সে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। [বুখারি-মুসলিম]
সন্তানকে একটি আদব শিক্ষা দেয়া এক ‘সা’ পরিমাণ সদকা করা অপেক্ষা উত্তম। [তিরমিযি]
আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসুল সা. এর দেওয়া এই অর্পিত দায়িত্ব পালনে সকল অভিভাবকেই সচেতন হওয়া উচিত।
আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসুল সা. এর দেওয়া এই অর্পিত দায়িত্ব পালনে সকল অভিভাবকেই সচেতন হওয়া উচিত।
একজন অভিভাবত কে যথাযতভাবে
দায়িত্ব পালণের পাশাপাশি নিম্নের দায়িত্বগুলো অবশ্যই পালণ করতে হবে-----
১.
চারিত্রিক দায়িত্ব
২. ঈমানি দায়িত্ব
৩. অনুশীলনের
দায়িত্ব
৪. জ্ঞাণী
দায়িত্ব
৫. সামাজিকতার দায়িত্ব
১. চারিত্রিক দায়িত্ব: সন্তানের চরিত্র গঠনে অভিভাবক কে সচেতন হতে হবে কেননা সন্তান
বেড়ে উঠার আগ মূহুর্তে অভিভাবক কে অবশ্যই সন্তানের
উপর নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। সন্তান কোন দিকে যাচ্ছে ও কার সাথে মিসছে সৎ বন্ধু
নির্বাচন করেছে কি না সবদিকে খেয়াল রেখে তাকে পরিচালনা করতে হবে। কেননা এই সময় যদি
খারাপ ও দুষ্ট প্রকৃতির লোকদের সোথে চলাফেরা করে তার স্বভাব চরিত্র তাদের ন্যায় হবে।
...........................................................
শিক্ষক ছাত্রের সম্পর্ক ও বর্তমান প্রেক্ষাপট পার্ট-1
শিক্ষক ছাত্রের সম্পর্ক ও বর্তমান প্রেক্ষাপট পার্ট-2
.........................................................................................................................
২. ঈমানি দায়িত্ব ; সন্তান যখন ৭-৮ বছরে পদার্পণ করবে ঠিক তখন থেকে তাকে নামাজ/প্রার্থনার
জন্য বলতে হবে। পিতা মাতা যদি কাছে থাকে তাদের সাথে তাকে নামাজ শেখাতে হবে। সমাজের
ভাল শ্রেণীর মানুষের দিকে আকৃষ্ট করে তাকে অনুপ্রাণীত করতে হবে। স্কুল বা মাদ্রাসায়
তাকে ভর্তি করে দিতে হবে।
৩. অনুশীলনের দায়িত্ব: সন্তানকে সবসময় গালিগালাজ করা যাবে না। সময় অনুপাতে তাকে খেলাদুলার
প্রতি অনুপ্রাণীত করতে হবে। খেলা শরীর ও মন উভয় ভাল রাখে। অনুশীলনের উপর নির্ভর করে
তাকে বেড়ে উঠতে হবে। কেননা সন্তান যে বিষয়ে অনুশীলনে রাজি হয় সে বিষয়ের প্রতি তাকে
উৎসাহ প্রধান করতে হবে। কেননা এই উৎসাহের উপর ভিত্তি করে তার ক্যারিয়ার গড়ে উঠবে।
৪. জ্ঞাণী দায়িত্ব:
ইসলামি জ্ঞান দান দ্বারা তাকে
পরিপূর্ণ আত্বশুদ্ধির দিকে ধাবিত করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক জ্ঞান দান দ্বারা তাকে
পরিপূর্ণ ইসলামিক ভঙ্গিতে গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বই, ইসলামিক বই, ইসলামিক
কালচার ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাকে অভিহিত করতে হবে। আখলাক ও চরিত্র যখন গড়ে উঠবে ঈমান
তখন ফলপ্রসু হবে। কেননা ইসলামিক জ্ঞান একজন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ধাবিত করে।
৫. সামাজিকতার দায়িত্ব: সামাজিকতা শিক্ষা সমুন্নত জ্ঞান, সামাজিক আদব ও শিষ্টাচারে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলা দ্বারা ইসলামী আকীদার উপর বিশ্বাস ও ঈমানী চেতনারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে। যাতে করে এই সন্তানই আদব কায়দা শিষ্টাচারে জ্ঞানে-গুণে, চাল-চলনে, বেশ-ভূষণে মোট কথা সার্বিক দিক দিয়ে সমাজের একজন আদর্শ মানুষ হিসাবে গণ্য হতে পারে এই বিষয়ে একজন অভিভাবক
কে সচেতন হতে হবে।ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, মোটকথা যে কোন ক্ষেত্রে যে কোন পরিস্থিতিতে যে
বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বের দাবিদার তা হল আখলাক চরিত্র ও আত্মিক গুণাবলি। এক্ষেত্রে একজন অভিভাবক কে নজরদারির মাধ্যমে সর্বাদিক পরিদর্শন করতে হবে।
0 comments:
Post a Comment