মাদক একটি সামাজিক সমস্যা/ রাস্ট্রিয় সমস্যা। মাদকাসক্তি আমাদের সমাজে এক সর্বনাশা ব্যাধিরূপে পরিণত হয়েছে। দুরারোগ্য ব্যাধির মতোই তা আমাদের তরুণ সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে দিনের পর দিন। এটি এমন একটি
ব্যাধি যার তীব্র ধ্বংশনে নষ্ট হয়ে যায় আগামিদিনের ভবিষ্যৎরা। মাদকের ভয়াবহ পরিণতি দেখে আজ অভিভাবকরা আতঙ্কিত, প্রশাসন বিচলিত, চিকিৎসকরা দিশেহারা। এর ছোবলে আজ যোব সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যাওয়ার
উপক্রম। নেশার কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রাণ ধ্বংস হচ্ছে পরিবার ও সামাজিক শান্তি সৃঙ্কলা । আজ রাষ্ট্র অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানি দেখতে পাচ্ছে না। দাবাগিরির মতো এ নেশার
ছোবল ছড়িয়ে পড়েছে শুদুর গ্রাম থেকে শহরতলিতে। মাদকাসক্তির সমস্যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে তাতে আমাদের দেশও শামিল হয়েছে তাদের মধ্যে।এর পরেও এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একত্রিত হয়ে কাজ করে কুফল সমাজ গড়ে তুলার জন্য
সবাইকে সচেতনতার হাত সম্প্রসারণ করতে হবে।।
Orbit Computer |
এবার জেনে নি মাদকদ্রব্য কী :
মাদকদ্রব্য গ্রহণে একটি মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় না থেকে অস্বাভাবিক অবস্থায় চলে যায় এবং তার ফলে এক সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। আর আমরা এক কথায় তাকে বলে
থাকি মাতাল। বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত মানবকল্যাণে সৃষ্ট ভেষজদ্রব্য কে আমরা মাদক বলতে পারি না। এই ভেষজদ্রব্যগুলো নির্দিষ্ট মাত্রায় চিকিৎসকরা রোগীর সেবায় ব্যবহার করে থাকেন । আর মধ্যপায়িরা তার অপব্যাবহার ও মাত্রাধিক্যতায় সমাজের অসাধু লোকদের ফলে সেই কল্যাণকর ভেষজদ্রব্যই অকল্যাণকর মাদক হয়ে আমাদের সমাজকে ধ্বংস করে দয়ে। তবে বলতে গেলে বর্তমানে মাদকদ্রব্যের উপাদান সমূহের ব্যবহার চিকিৎসা শাস্ত্রের তুলনায় অপব্যবহারই বেশি হচ্ছে।
মাদকদ্রব্যের প্রকার:
মদ, গাঁজা, আফিম, চরস, ভদকা প্রভৃতি নেশাকর দ্রব্য বহু প্রাচীনকাল থেকেই সারা বিশ্বে প্রচলিত হয়ে আসছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে মাদকদ্রব্যেরও যথেষ্ট পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বর্তমানকালে মাদকদ্রব্য হিসেবে হিরোইন, মারিজুয়ানা, প্যাথেড্রিন , মরফিন, পপি, , ক্যানবিস, স্মাক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়াও ইয়াবা নামক মাদকের সর্বনাশা ছোবল বর্তমান যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
মাদকাসক্তির কারণ :
যারা নেশা করে তাদের অধিকাংশই জানে যে, নেশা ভালো কাজ করে না। মাদকের নেশা জীবন নষ্ট করে জেনেও তারা নেশার মধ্যে থাকতে সাচ্ছন্ধবোধ করে।আপনি কি জানেন আমাদের যুবসমাজ নেশায় মেতে উঠার কারণ কি ? আসুন এ বিষয়ে আমরা কিছু আলোকপাত করি-----
*** বন্ধুদের প্ররোচনা : এ কথা খুবই সত্য যে বন্ধুদের প্ররোচনায় পড়ে অনেকে মাদকাশক্ত হয়ে পড়ে। যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে তাদের মধ্যে যদি মাদকের নেশা চালু থাকে তবে তাদের আসক্তিতে আসক্ত হবে তার ঘনিষ্ট বন্ধু। সেই কাজে অঙ্গ নিতে মাদকাসক্তরা বাধ্য করে তার বন্ধুকে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ যুবসমাজ এভাবে নেশাগ্রস্ত বা মাদকাসক্ত হয় হয়ে পড়ে।
*** কৌতুহল : যৌবন ও কৈশরে এমন একটা সময় আসে যখন অজানাকে জানার বেড়ে যায়। কৌতুহলের বশে কেউ কেউ মাদকের জালে আটকা পড়ে তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না বা আসতে চাইলেও তার পক্ষে কষ্টসাধ্য
হয়ে পড়ে।
*** অতি দ্রুত আনন্দ লাভের বাসনা : অতি মাত্রায় আনন্দ লাভের বাসনাকে কেন্দ্র করে
মানুষ মাদকের প্রতি আসক্ত হয়। এতে করে তার জীবন ধ্বংস লীলায় মেতে উঠে। যা কঠিন
ছোবল থেকে সে আর বেরিয়ে আসতে পারে না।
*** বিদ্রোহী মনোভাব : যৌবনের সন্ধিক্ষণে ছেলে-মেয়েরা বিদ্রোহী মনোভাব ব্যাক্ত করে।প্রেমের জালে আটকা পড়ে প্রেমের ব্যার্থতার পর্যবসিত হয়ে মাদকাসক্তির দিকে ঝুকে পড়ে।
*** নিজেদের পরিবেশ : অনেক
ক্ষেত্রে নিজেদের পরিবেশ ঠিক না থাকার কারণে ছেলে মেয়েরা মধ্যপায়ি হয়ে থাকে। অনেক
ক্ষেত্রে দেখা যায় পিতা মাতাদের কু অভ্যাসের কারণে সন্তানেরা মাদকাশক্তির দিকে
ঝুকে পড়ে।
*** ধর্মিয় অনুভুতি না থাকা: পিতা মাতাদের ধর্মিয় বিধি নিষেধের অভাবের কারণে, ছেলে মেয়েরা ধর্মিয় বিধি বিধান অবজ্ঞা করে মাদকাসক্তির প্রতি ঝুকে পড়ে।
মাদক কখনো আমাদের সমাজের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে না।
তাই জাতি দল নির্বিশেষে সকলকে মাদক
বিরুধি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
আমাদের পরিবার থেকে শুরু করতে হবে
মাদক বিরুধি অভিযান। পিতা মাতাকে অবশ্যই সজাক হতে হবে যে, তার ছেলে কোথায় যাচ্ছে,
কি করছে, কার সাথে মিছচে তার প্রতি।
পরিবারের একে অপরের মধ্যে
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে হবে।
আমরা যোবসমাজ যদি মাদক বিরোধি আন্দোলন
গড়ে তোলতে পারি আমাদের দেশ তথা গোটা জাতিকে আমরা মাদকমুক্ত করতে পারব।
0 comments:
Post a Comment